প্রধান উপদেষ্টা ও প্রেস সচিবের বক্তব্যে বিএনপির সমালোচনা
- By Jamini Roy --
- 19 December, 2024
বাংলাদেশের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের বক্তব্য পরস্পরবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচন আয়োজনের সময়কাল অস্পষ্ট ছিল বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “নির্বাচনের বিষয়ে ড. ইউনূস ও তার প্রেস সচিবের বক্তব্যে অসঙ্গতি রয়েছে। এমন পরিস্থিতি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হতাশা বাড়াবে। আমরা স্পষ্ট বক্তব্য প্রত্যাশা করি।”
তিনি আরও বলেন, দ্রুত সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। বিএনপি আশা করে যে নির্বাচন কমিশন একটি যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য সময়সীমা নির্ধারণ করবে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “নির্বাচনের রোডম্যাপ যথেষ্ট স্পষ্ট। সরকার সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আশা করা হচ্ছে, ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। তবে মনোনয়ন দাখিল এবং নির্দিষ্ট তারিখ নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত করবে।”
ব্রিফিংয়ে উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারও বলেন, “নির্বাচনের নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। সরকারের কাজ হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা।”
মহান বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “যদি নির্বাচন শুধুমাত্র ভোটার তালিকা সংশোধন এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের ওপর নির্ভর করে, তাহলে ২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তবে যদি অতিরিক্ত সংস্কার কার্যক্রম যোগ করা হয়, তাহলে সময়কাল আরও ছয় মাস বাড়তে পারে। ফলে ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, “নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে গঠিত হয়েছে। নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি দ্রুত শেষ করা সম্ভব। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে সময়কাল অস্পষ্ট এবং যৌক্তিক ভিত্তি নেই।”
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার আমলে হওয়া অতীতের নির্বাচনগুলো অবৈধ ছিল এবং সেগুলোতে গণতন্ত্রের লঙ্ঘন ঘটেছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো আশা করছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য একটি রোডম্যাপ প্রকাশ করা হবে। এটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং জনগণের আস্থা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।